ধনী হওয়ার সেরা ৪টি সহজ উপায়, বসে বসে টাকাওয়ালা হওয়ার উপায় | Ways to get rich in bangla

 ভূমিকাঃ হ্যালো বন্ধুরা এই আর্টিকেলে আমি জানাবো কোন কোন উপায় এর মাধ্যমে বসে থাকলেও টাকা ইনকাম করা যাবে। সেগুলো আমি ৪টি উপায় নিয়ে আলোচনা করবো, যেগুলোর যেকোন একটি কাজ ঠিকঠাক মত দাড় করাতে পারলে আপনি বসে বসে টাকা আয় করতে পারবেন এবং ধীরে ধীরে আপনি টাকাওয়ালা হয়ে উঠবেন। তো আর্টিকেলের সম্পূর্ণটা দেখুন আশা করি বুঝতে পারবেন।



ধনী হওয়ার সেরা ৪টি সহজ উপায়

ধনী হওয়ার উপায়

বসে বসে টাকাওয়ালা হওয়ার উপায়

অর্থনীতির ভাষায় এই পৃথিবীতে টাকা ইনকাম করার প্রসেস হলো দুইটা। তাহলোঃ

১. এক্টিভ ইনকাম।

২. প্যাসিভ ইনকাম।

এক্টিভ ইনকাম কাকে বলে?

এক্টিভ ইনকাম হলো কোন ব্যক্তি যতক্ষণ কাজ করবে ততক্ষণ সে টাকা পাবে, সে যদি কাজ না করে তাহলে তার টাকা ইনকাম হবে না। যেমন একজন চাকুরীজীবী দিনে যেকোন একটি নির্দিষ্ট সময়ে সারা মাস কাজ করার পর, তিনি একটা নির্দিষ্ট বেতন পায়। আর সে যদি চাকুরী না করে তাহলে সে টাকা পাবে না। তেমনি ভাবে কোন রিক্সাওয়ালা, রাজমিস্ত্রি, দিনমুজুরী, দোকানদার তারা যদি তাদের নির্ধারিত কাজ না করে তাহলে সে টাকা পাবে না। আর এটাকেই বলা হয় এক্টিভ ইনকাম।

Ways to get rich in bangla

প্যাসিভ ইনকাম কাকে বলে?

প্যাসিভ ইনকাম এর মানে হচ্ছে কেউ যদি কাজ নাও করে তবুও তার টাকা আসবে। এই ইনকামের প্রসেসটা এমনই ব্যক্তি ঘুমিয়ে থাকলেও তার টাকা ইনকাম হতে থাকবে। বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে ধণী ব্যক্তি হলেন ইলন মাস্ক। ইলন মাস্ক বলেন আমার পকেট থেকে যদি $১০০ এর নোট মাটিতে পরে যায়, তাহলে আমি সেই নোট উঠাই না, কারন সেইটা উঠাতে আমার যতটুকুন সময় লাগবে, ততটুকু সময়ের মধ্যে আমার আরো $৫০০ ইনকাম হয়ে যাবে। এটাই হচ্ছে প্যাসিভ ইনকামের প্রসেস।


তাই এই পৃথিবীতে সকল বড় বড় ধণী ব্যাক্তিরা সবাই প্যাসিভ ইনকামের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করে থাকেন। তারা যদি ঘুমিয়েও থাকেন তারপরেও তাদের টাকা আয় হতে থাকে। কারন তারা একটি প্যাসিভ ইনকাম এর পথ তৈরি করে রেখেছে। তাই আমরা যারা ধণী হতে চাই তাদের প্রত্যকেরই একটা প্যাসিভ ইনকামের পথ তৈরি করে রাখতে হবে। যতদিন না আপনি প্যাসিভ ইনকামের প্রসেসটা তৈরি করে রাখছেন না, ততদিন আপনি ধণী হতে পারবেন না।


তো আজ আমি এই আর্টিকেলে এমন চারটি প্যাসিভ ইনকামের কথা বলব, যে চারটি প্যাসিভ ইনকামের মধ্যে যেকোন একটি প্যাসিভ ইনকাম যদি আপনি দাড় করাতে পারেন, তবে লাইফে টাকা নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না। টাকার ওভাব সম্পূর্ণ রুপে দূর হয়ে যাবে। এই প্যাসিভ ইনকাম গুলোর মাধ্যমে কাজ না করেও ঘুমিয়ে থেকে টাকা ইনকাম হতে থাকবে।

তাহলে চলুন সেই চারটি প্যাসিভ ইনকাম সম্পর্কে জেনে নিয়া যাকঃ

জীবনে ধনী হওয়ার উপায়

ধনী হওয়ার উপায় কি

১. ব্লগিং বা কন্টেন্ট রাইটিং

কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু সে ব্লগিং করে এক মাসে ৫৭ হাজার টাকা আয় করেছে। এটা শুনে আমি অবাক হয়ে যাই। তারপর আমি ইউটিউবে এই বিষয়ে চার্চ করে দেখি যে এর সত্যটা কতটুকুন? যে, ব্লগার বা কন্টেন্ট রাইটিং করে আদৌ কি এত টাকা ইনকাম করা যায়? এরপর ইউটিউবে আমি যা দেখলাম, তা দেখে আমি আরো অবাক হয়ে যাই বাংলাদেশ এবং ইন্ডিয়াতে এমন ব্লগার আছে যারা প্রতিমাসে $১০০০-$২০০০ ডলার ইনকাম করে, যা বাংলাদেশী টাকায় ৮৫ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা।


এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ব্লগিং বা কন্টেন্ট রাইটিং টা কি?

সেইটা হচ্ছে আমাদের প্রায় সবার কাছেই কম্পিউটার বা মোবাইল আছে। যখনই আমাদের কোন কিছুর বিষয় জানার প্রয়োজন পরে তখনই আমরা মোবাইল ফোনে বা কম্পিউটারে গিয়ে গুগলে চার্চ করি। এই চার্চ করার সাথে সাথে গুগল আমাদের কাঙ্খিত বিষয় গুলো আমাদের সামনে অনেক গুলো সাজেক্ট করে। সেগুলোর মধ্যে থেকে আমরা ১-২ থেকে ক্লিক করে সেই বিষয় গুলো সম্পর্কে পড়ে জেনে নি।

এই যে বিষয় গুলো পড়ি সেগুলো গুগল বা গুগলের কোন কর্মচারী লিখে রাখি নাই। এই গুলো লিখে রাখে কিছু ব্লগার বা কন্টেন্ট রাইটার। তারা তাদের কন্টেন্ট গুলো গুগলের কাছে সাবমিট করে তখন গুগল আমাদের সেই কন্টেন্ট গুলো দেখায়। এর পাশাপাশি গুগল কিছু ads দেখায়, সেই প্রত্যেক কন্টেন্ট এর মাঝে বা কন্টেন্ট এর উপরে নিচে। আর এই ads গুলো দেখানোর বিনিময়ে গুগল কন্টেন্ট রাইটারদেরকে টাকা বা ডলার দেয়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই কন্টেন্ট রাইটার কিভাবে করে?

এই কন্টেন্ট রাইটার করার জনপ্রিয় মাধ্যম হলো দুইটি। তাহলোঃ

১. Blogger

২. WordPress

ব্লগারে কন্টেন্ট রাইটিং সম্পূর্ন ফ্রি, কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেসে কন্টেন্ট রাইটিং করার জন্য কিছু টাকা দিতে হয়, যেমন বছরে মাত্র ২-৪ হাজার টাকা।

সহজে ধনী হওয়ার উপায়

কন্টেন্ট রাইটিং কি?

কন্টেন্ট রাইটিং হলো কোন কিছুকে নিয়ে লেখা লেখি করা। সেইটা যেকোন বিষয় হতে পারে, যেমন শিক্ষা বিষয়, স্বাস্থ্য বিষয়, গল্প কাহিনী বিষয়, টেকনোলজি বিষয় আবার হতে পারে নিউজ নিয়ে, অর্থাৎ যেকোন বিষয় নিয়ে লেখা লেখি করা যাবে। যদি কন্টেন্ট গুলো গুগলে রেংক হয়ে যায়, তাহলে সেই কন্টেন্ট রাইটার বসে বসে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা পাবে। 

তবে প্রথম দিকে ৩-৫ মাস খুব মনযোগ দিয়ে কাজ করতে হবে। বিষয়টা একবার পুরোপুরি বুজে নিতে পারলে তখন আর টাকার অভাব হবে না। আপনি একটা কেনো ৪-৫ টা পরিবার ও চালাতে পারবেন। 

তো দুইটা মাধ্যমে আপনি কন্টেন্ট রাইটিং শিখতে পারবেন। প্রথম টি হলো ফ্রিতে আর দ্বিতীয় টি হলো টাকা দিয়ে। আমাদের দেশে অনেক আইটি প্রতিষ্ঠান আছে যারা ৬-৮ হাজার টাকার বিনিময়ে কন্টেন্ট রাইটিং শিখাচ্ছে। তবে আপনি প্রথমে ফ্রিতে কন্টেন্ট রাইটিং শুরু করতে পারেন। ফ্রিতে শিখার জন্য আপনি ইউটিউবে গিয়ে চার্চ করতে পারেন, How to create a blogger website and earn money bangla তাহলে আপনি অনেক গুলো ভিডিও পাবেন যেখান থেকে আপনি দেখে বিষয়টি জানতে ও শিখতে পারবেন।

দ্রুত ধনী হওয়ার উপায়

২. ভিডিও মেকিং

ভিডিও তৈরি করে টাকা ইনকাম করার অন্যতম মাধ্যম হলো YouTube, এই মাধ্যমে ও বসে বসে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা ইনকাম করা যায়, তবে তার আগে এই পথটা তৈরি করে নিতে হবে। ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করা সম্পূর্ণ ফ্রি, এখানে শুধু একটি জিমেইল এর দ্বারায় যে কেউ জয়েন হতে পারবে, আর জয়েন হওয়ার পরেই ব্যক্তির একটি চ্যানেল তৈরি হবে তারপর এই চ্যানেলে ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে টাকা ইনকাম হবে। কিন্তু ভিডিও থেকে টাকা ইনকাম শুরু করার আগে ইউটিউবের কিছু শর্ত পূরন করতে হবে।

সেই শর্ত গুলো হলোঃ

চ্যানেলে ১২ মাসের মধ্যে এক হাজার সাব্সক্রাইব পূর্ণ করতে হবে এবং চ্যানেলের ভিডিওতে ১২ মাসের মধ্যে ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম পূর্ণ করতে হবে।

চ্যানেলে এই শর্ত গুলো পূর্ণ হয়ে গেলে চ্যানেল মালিক মনিটাইজের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবে। তারপর চ্যানেলে মনিটাইজ অন হয়েগেলে ইনকাম শুরু হবে।


ভিডিও তৈরি কি?

ভিডিও তৈরি হলো ইউনিক কোন কিছুকে নিয়ে ভিডিও তৈরি করা। সেইটা যেকোন বিষয়ের উপর হতে পারে যেমন, টেকনোলজি নিয়ে, রান্না বান্না নিয়ে, শিক্ষামূলক ঘটনা নিয়ে, মজার কোন বিষয় নিয়ে, মূল কথা হলো, যে যেটাতে পারদর্শী সে সেই বিষয় নিয়ে ভিডিও তৈরি করবে। যদি তার ভিডিও গুলো ইউটিউবে ভাইরাল হয়ে যায়, তাহলে সে বসে বসে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা পাবে।

তবে প্রথম থেকে ৪-৬ মাস মনযোগ দিয়ে কাজ করতে হবে। বিষয় টা একবার পুরোপুরি বুঝে নিতে পারলে তখন আর টাকার অভাব হবে না।

ভিডিও তৈরি করে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ইউটিউবে গিয়ে চার্চ করতে পারেন, How to create youtube channel and make money bangla, তাহলে আপনি অনেক গুলো ভিডিও পাবেন সেখান থেকে দেখে দেখে বিষয়টি জানতে ও শিখতে পারবেন।


৩. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

আমাদের দেশে অনেক এমন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার আছে যারা প্রতি মাসে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ইনকাম করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে বিভিন্ন মাধ্যম যেমন সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, পিন্টারেস্ট ও ইউটিউব এর মাধ্যমে একটা প্রোফাইল তৈরি করে সেইটার ফলোয়ার সংখ্যা বাড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রডাক্ট বিক্রি করা।

এই কাজটি প্রথম দিকে যদিও একটু কঠিন হয় কিন্তু একবার যদি একটা প্রোফাইল দাড় করানো যায় তাহলে আর কোন কথাই নেই। আপনি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বছর পার করে দিলে ও ইনকাম আসতে থাকবে। শুধু মাঝে মধ্যে একটু কাজ করতে হবে প্রোফাইল টা সচল রাখার জন্য। 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখার দুইটি মাধ্যমঃ

১. ফ্রি

২. পেইড

ফ্রিতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখার জন্য ইউটিউবে গিয়ে চার্চ অপশনে লিখতে হবে How to learn affiliate marketing bangla তাহলে অনেক গুলো ভিডিও পাওয়া যাবে সেখান থেকে ভাল ভিডিও গুলো দেখে দেখে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শেখা যাবে।

পেইড পাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার জন্য আমাদের দেশে অনেক আইটি প্রতিষ্ঠান আছে যারা ১০-১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শেখিয়ে দেয়। তবে আমি বলবো প্রথমে ফ্রিতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার জন্য।


৪. ব্যবসা

ব্যবসা এমন একটি প্যাসিভ ইনকাম যার মাধ্যমে শুধু আপনি কেনো আপনার চৌদ্দ পুরুষ ও বসে বসে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে খেতে পারবে।

বর্তমানে এশিয়া উপ মহদেশের শ্রেষ্ঠতম ধনী ব্যক্তি হচ্ছেন মুখেশ আম্বানি। কিন্তু আম্বানি কি নিজে পরিশ্রম করে এশিয়ার সবচেয়ে ধনী হয়েছেন? না তিনি তার সম্পত্তির মূল অংশটা পেয়েছেন পৈতিক সূত্রে।

মুখেশ আম্বানির বাবা দিরুবা আম্বানি এই বিশাল সম্পত্তির বীজ বপন করে গিয়েছিলেন। তিনি এক সম্পদের পাহাড় তার ছেলেদের জন্য তৈরি করে গিয়েছিলেন। আর সেই সম্পদের সঠিক ব্যবহার করেছেন তার ছেলে মুখেশ আম্বানি। বাকি ছেলেরা যদিও এত সম্পদশালী হতে পারে নি, কিন্তু মুখেশ আম্বানি পৈতিক সূত্রে তার বাবার কাছ থেকে সম্পত্তি পেয়ে সেটাকে সঠিক ব্যবহার এবং বুদ্ধি খাটিয়ে তিনি আজ এশিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ ধনী হতে পেরেছেন।

এছাড়াও বাংলাদেশের প্রাণ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আমজাদ খান তার অবসরের টাকা দিয়ে প্রাণ আরএফএল গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছেন। বর্তমানে তার ছেলে আহসান খান চৌধুরী প্রাণ আরএফএল পন্য দিয়ে সারা বাংলাদেশ সহ ৪৮ টি দেশে রাজত্ব করছেন।

তাই জীবনে বিশাল সম্পত্তির মালিক হতে চাইলে  তাই ব্যবসার কোন বিকল্পই নেই। একবার কোন ব্যবসা দাড় করাতে পারলেই ঘুমিয়ে থাকলেও টাকা আয় হতে থাকবে।

যেমন প্রাণ গ্রুপের মালিক যদি সারা দিন ঘুমিয়েও থাকে, তবুও দেশে যেকোন জায়গায় প্রাণের পন্য বিক্রি হবে এবং সেই মুনাফা তার কোম্পানি নিশ্চই পাবে। তাই বড় কিছু করার চেষ্টা করুন।


শেষ কথাঃ

উপরক্ত এই চারটি প্যাসিভ ইনকামের মধ্যে আপনি যেকোন একটি মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা শুরু করে দিতে পারবেন। তবে প্রত্যেকটাতে প্রথম দিকে কস্ট করে মনযোগ দিয়ে কাজ করতে হবে, হাল ছাড়া চলবে না। তবেই আপনি সফলতা পাবেন। ধন্যবাদ

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url